ফ্যাটি লিভার পৃথিবীর অনেক দেশের মতো আমাদের দেশেও খুবই পরিচিত একটি রোগ। আক্ষরিক অর্থেই এ রোগে যকৃতে চর্বি জমতে থাকে, যা থেকে কারও লিভার সিরোসিস বা যকৃতের ক্যান্সারও হতে পারে। আজকাল আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে গিয়ে আমরা জানতে পারি, আমাদের ফ্যাটি লিভার আছে বা লিভারে চর্বি জমেছে। যেমনটি বোঝা যাচ্ছে, মেদ-ভুঁড়ি এ রোগের অন্যতম কারণ। পাশাপাশি ডায়াবেটিস, হাই ব্লাডপ্রেসার, ডিজলিপিডেমিয়া বা রক্তে চর্বি বেশি থাকা ইত্যাদি এ রোগের অন্যতম কারণ। তাই ফ্যাটি লিভার চিকিৎসার প্রধান দিকটি হচ্ছে লাইফস্টাইল মডিফিকেশন বা নিয়মিত হাঁটা, ব্যায়াম করা এবং পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া।
শুধু যে লাল মাংস যেমন-খাসি বা গরুর মাংস, ডিমের কুসুম, চিংড়ি মাছ, পনির, মাখন, বিরিয়ানি ইত্যাদি উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে তাই নয়, পাশাপাশি অতিরিক্ত শর্করা যেমন ভাতের ব্যাপারেও খুব সাবধান। কারণ অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবার খেলে তা লিভারে গিয়ে চর্বি হিসেবেই জমা হতে থাকে। একইভাবে সাবধান থাকতে হবে ফাস্টফুড এবং জাঙ্ক ফুডের ব্যাপারে। পাশ্চাত্যের মতো ফাস্টফুড কালচারের ব্যাপক প্রসারের ফলে এ দেশেও এখন, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি। সত্যি বলতে কী, হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের পর, ফ্যাটি লিভারই এখন এ দেশে ক্রনিক লিভার ডিজিজের প্রধান কারণ। পাশাপাশি ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত রোগীদের হার্ট ডিজিস বা ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও অনেক বেশি থাকে।
ডা. মামুন-আল-মাহতাব (স্বপ্নীল) সহযোগী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।