গাড়িতেই চড়লেই অনেকে অসুস্থ বা বমি বমি ভাব বোধ করেন। কেউ কেউ আবার প্লেনে চড়লেও এ ধরনের অস্বস্তি বোধ করেন।এটাকে মোশন সিকনেস বলে। এটা হলে অনেকের আবার বমি হয়, মাথা ঘোরে, তদ্রাভাব, ঘাম হয়, অস্বস্তি, মাথাব্যথা, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া- এসব উপসর্গ দেখা দেয়।
ভ্রমণে বমির কারণে অনেকেই ভয় পান গাড়িতে উঠতে। বমি হবার প্রবণতা মানসিক ও শারীরিকভাবে আপনাকে দুর্বল করে ফেলে। যা ভ্রমণের আনন্দ নষ্ট করে দেয়। কিছু নিয়ম মেনে চললেই মুক্তি পাওয়া যাবে এই সমস্যার। চলুন জেনে নিই কি করলে যাত্রা পথে আপনি বমি থেকে মুক্তি পাবেন-
আদা
গতি অসুস্থতা দুর করতে আদা খুব ভালো কাজ করে। অনেকেই তাই আদা রাখেন ভ্রমণের সময়। আমাদের দেশেও বাসে হকাররা বিভিন্ন রকম খাবার নিয়ে উঠলে আদার লজেন্স বা শুকনা আদা বিক্রি করে।
জলপাই + লেবু
বাসা থেকে জলপাই আর লেবুর রস মিশ্রিত শরবত বানিয়ে নিয়ে যাত্রা পথে অল্প অল্প করে খেতে পারেন। আবার শুধু জলপাইও সাথে নিতে পারেন। বস্তুত গতি অসুস্থতায় শুধু জলপাই লেবু-জলপাইয়ের রসের থেকে বেশি কার্যকর।
হালকা গরম পানি + লেবু + মধু
এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে ১ চামচ লেবুর পানি সাথে ১ চামচ মধু ভাল করে মিশান। এরপর গাড়িতে উঠার আগ মুহূর্তে খেয়ে নিবেন। এ পদ্ধতি অনেক কার্যকর।
লেবু + আদা
১ গ্লাস আদার জুসে ১ চামচ লেবুর রস যুক্ত করুন। মিশ্রণটি ভাল করে মিশান। ভ্রমণে যাওয়ার আগ মুহূর্তে খেয়ে নিন। এ পদ্ধতিটিও কাজে দিবে।
পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতা গতি অসুস্থতা বা বমি বমি ভাব দুর করতে অনেক উপকারী বন্ধুর কাজ করে। আর এই পদ্ধতিটিও অনেক সহজ। আপনি শুধুমাত্র কিছু পুদিনাপাতা সাথে নিয়ে গাড়িতে উঠুন। ব্যাস, এরপর থেকে খারাপ লাগলেই পুদিনা পাতা মুখে নিয়ে একটু একটু করে চুষতে থাকুন। যাদুর মতো কাজ করবে আশা করা যায়।
শুকনো খাবার
চিপস, চানাচুর, বুট-ভাজা বা যেকোনো রকমের শুকনা খাবার ইত্যাদি যে খাবার গুলো অল্প অল্প করে অনেক্ষন খাওয়া যায়। এগুলো আপনার দ্বিধায় থাকা মস্তিষ্ককে বিচলিত হওয়া থেকে বিরত রাখবে।
লজেন্স
চুষে খাওয়া যায় এরকম যেকোনো খাবারই গতি অসুস্থতা দুর করতে ব্যাপক কাজে দেয়। বিশেষ করে টক বা হালকা ঝাঁজযুক্ত লজেন্স খেতে পারেন।
চুইংগাম
অনেকের কাছে গতি অসুস্থতা উপশমে চুইংগাম কার্যকরী ওষুধের মত। সুতরাং সাথে চুইংগাম রাখতে পারেন।
একটি গবেষণায় গবেষকরা দেখিয়েছেন যে কেউ গতি অসুস্থতার সময়ে যদি বেশি পরিমাণে পানির ব্যাবহার করে আবার খুব সাধারণভাবে যদি বসার স্থান পরিবর্তন করে, তাহলে এর কিছুটা লাঘব হয়। কিন্তু তারপরেও কেউ নির্দিষ্ট করে ব্যাখ্যা করতে পারছে না যে, ঠিক কী কারণে গতি অসুস্থতা হচ্ছে।
আরো যা করতে হবে
- ভ্রমণের সময় জানালার পাশে বসুন।
- যাদের বমির সমস্যা আছে তারা গাড়িতে ওঠার আগে হালকা কিছু খেয়ে উঠুন। যাত্রাপথে ভারি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- অন্য যাত্রীকে বমি করতে দেখলে অনেকের বমি পায়। সেক্ষেত্রে যাত্রীদের দিক থেকে মনোযোগ সরিয়ে অন্য দিকে মনোযোগ দিন।
- ট্রেন, বাস বা গাড়ির উল্টো দিকে মুখ করে বসবেন না। এতে মাথা ঘুরায় এবং বমিভাব আরো বেশি হয়। গাড়ি যেদিকে যাচ্ছে সেদিকে মুখ করে বসুন।
- ভ্রমণের সময় মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। বমি হতে পারে এই কথা মাথায় আনবেন না। প্রয়োজনে গান শুনুন বা বই পড়ুন।
- গাড়ির গ্লাস না লাগিয়ে রেখে মুক্ত বাতাস উপভোগ করুন।
তবে অতিরিক্ত সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যাত্রা শুরু আগে বমি নিরোধক ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।