বেশীরভাগ নারীই নরমাল ডেলিভারি প্রত্যাশা করেন। তারপরও শারীরিক অবস্থার কারণে সিজার করানোর প্রয়োজন হতে পারে। কিছু বিষয় আপনাকে নিরাপদ প্রসবের অনেকটা নিশ্চয়তা দিতে পারে। প্রথমবার মা হওয়ার ক্ষেত্রে প্রসব বেদনা আঁচ করতে পারাটা খুবই কঠিন। নরমাল ডেলিভারির কিছু টিপস জানা থাকলে তা আপনার জন্য সহায়ক হবে। চলুন তাহলে জেনে নিই সেই টিপসগুলো।
ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলুন
যদি আপনার ব্যায়াম করার অভ্যাস না থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় শুরু করুন কোন অজুহাত না দেখিয়ে। প্রসবের চাপ সহ্য করার জন্য শ্রোণি অঞ্চলের পেশী ও উরুর পেশীকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যায়াম করুন। কীভাবে এই ব্যায়াম করতে হয় না জানলে আপনার চিকিৎসকের সাহায্য নিন। মনে রাখবেন সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম না করলে আপনার ও আপনার বেবির ক্ষতি হতে পারে।
দমচর্চা করুন
সঠিক ভাবে দমচর্চা করলে স্ট্রেসের মাত্রা কমতে সাহায্য করে, এনার্জিকে উদ্দীপিত করে এবং গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ও গঠনের উন্নতিতে সাহায্য করে। দম চর্চার ফলে শিশু পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় এবং প্রসবের সময় মায়ের সাথে সহযোগিতা করতে পারে। এজন্য নিয়মিত দম চর্চা করুন।
নরমাল ডেলিভারির ভয়ংকর ঘটনা শোনা এড়িয়ে চলুন
অনেক নারীই হবু মায়েদের প্রসবের ভয়ংকর ঘটনা বলতে পছন্দ করেন। নেতিবাচক গল্প প্রসবের সময় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এ ধরণের গালগল্প শোনা থেকে বিরত থাকুন।
সঠিক খাবার খান
প্রেগনেন্সি, প্রসব ও শিশুর জন্মের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে খাবার। কিন্তু খাওয়া নিয়ে প্রচলিত মিথ এড়িয়ে চলুন, যেমন- গর্ভাবস্থায় ঘি বা তেল গ্রহণ করলে শিশু খুব সহজেই ভূমিষ্ঠ হয়। মনে রাখবেন পরিপাক নালীর সাথে বার্থ ক্যানেলের কোন সম্পর্ক নাই। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া আপনাকে সুস্থ রাখতে ও শক্তিশালী করতে এবং শিশুর বৃদ্ধি ও গঠনের উন্নতিতে সাহায্য করে। একজন সুস্থ মায়ের স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। সঠিক পুষ্টি ভ্রূণকে জন্ম প্রক্রিয়ার স্ট্রেস সহ্য করতে সাহায্য করে। কিন্তু আপনার ওজন যেন অস্বাভাবিক পর্যায়ে না চলে যায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ অধিক ওজন স্বাভাবিক প্রসবকে বাঁধাগ্রস্থ করতে পারে।
স্ট্রেসমুক্ত থাকুন
স্ট্রেসকে এড়িয়ে চলা আসলেই খুব কঠিন। তারপর ও আপনাকে চেষ্টা করতে হবে। গর্ভাবস্থায় আপনি যদি আপনার মনকে প্রশিক্ষিত করতে পারেন স্ট্রেস মুক্ত থাকার জন্য তাহলে ডেলিভারির সময়টাতেও স্ট্রেস মুক্ত থাকাটা খুব কঠিন হবেনা। প্রসবের সময় স্ট্রেস অনুভব করলে অক্সিটোসিন হরমোনের উৎপাদন কমে যায়। এই হরমোনটি প্রসবের সময় সংকোচন ঘটায়। স্ট্রেসের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে প্রসব দীর্ঘায়িত হয়। তাই স্ট্রেস মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
প্রেগনেন্সি ও প্রসবের বিষয়ে জানুন
বর্তমানে প্রেগনেন্সি ও প্রসবের উপর অনেক বই পাওয়া যায়। এগুলো পড়ে আপনি নিজেকে প্রস্তুত করে নিন।
পানি ব্যবহার করুন
পানি একমাত্র উপাদান যা আপনার লেবার পেইন কমাতে এবং নরমাল ডেলিভারি হতে সাহায্য করে। বাথটাবে উষ্ণ পানিতে বসে থাকুন। এছাড়াও প্রচুর পানি পান করুন।
হাঁটুন
প্রেগনেন্সির সময়টাতে হাঁটুন। কারণ হাঁটলে অবসাদ দূর হয়। আপনার পক্ষে যদি অনেকক্ষণ হাঁটা সম্ভব না হয় তাহলে অল্প দূরত্বে কিছুক্ষণের জন্য হলেও হাঁটুন।